কবিতাঃ পরিবর্তন 
নিকুঞ্জ কুমার বর্মন

আগের দিনে খবর পৌছাতে হাটে দিত ঢোল,
ঢোল পিটানো নেই এখন আছে মোবাইল ফোন।
মনের কথা জানাতে সবাই লিখত দূরে চিঠি,
ফেসবুক, টুইটার, হোয়াটসঅ্যাপে এখন প্রেমপ্রীতি।

যুবক যুবতীর চলাফেরায় থাকত কড়া শাসন,
নিত্যদিনে বাড়ছে এখন কিশোরী খুন ধর্ষন।
অশ্লীল কথায় তরুন তরুনী লাজে যেত মরে,
টাচ ফোনে পর্নো ছবি এখন দেখে মন ভরে।

চারদিকে ছিল জন্তু জানোয়ারে ভরা জঙ্গল,
মানুষে মানুষে পরস্পরের চাইত শুধু মঙ্গল।
মাতৃভক্তির জন্য কালিদাস ছিলেন রাত জেগে,
এখন সন্তান মাকে খুন করে যায় রেগে।

হারিয়ে গেছে কুপি আর হারিকেন বাতি,
বিজলীর আলো কেড়ে নিচ্ছে চোখের জ্যোতি।
স্ত্রীকে ভালবেসে তাজমহল গড়েছিলেন শাহজাহান,
স্বামীর হাতে স্ত্রীর মৃত্যু, স্ত্রীর হাতে স্বামী যেন শ্বশান।

ঘরে ঘরে ছিল ছাম গাহিন আর ঢেঁকি,
বিয়ের আসরে বর কনে চড়েনা আর পালকি।
ছিল কলেরা,প্লেগ,গুটিবসন্ত আর হামের রাজত্ব,
করোনার কাছে মানব জাতির আজ করুন অসহায়ত্ব।

পাহাড় পর্বত বনে জঙ্গলে বেড়াত ডাইনোসোর,
বন্য প্রাণি মারতে গিয়ে মানুষই যে করোনা চোর।
ক্ষুদ্রাতিক্ষুদ্র ভাইরাসের কাছে মানুষ আজ অতি নগন্য,
আবারও কি ফিরে আসবে ধরাতে আদিম অরন্য?
কেন তবে এত অবক্ষয় এত পরিবর্তন-
সর্ব মূলে কি আজ নৈতিকতার অধঃপতন?